“অনুপ্রেরণামূলক ক্ষমতায়ন ও উদ্ভাবন” প্রত্যয়ে এবার প্রথমবারের মতো হংকং এর বাইরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড”। তিন দিনের এই অলিম্পিয়াডে চীন, হংকং, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, নেদারল্যান্ড, নেপাল, মঙ্গোলিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং স্বাগতিক বাংলাদেশ থেকে মোট ৫০টিরও বেশি দল অংশগ্রহণ করছে এই অলিম্পিয়াডে। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের জন্য থাকছে সর্বমোট ৪০,০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পুরস্কার।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর ২০২১) রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার-এর বিসিসি অডিটরিয়ামে তিন দিনের এই অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা, গ্লোবাল ব্লকচেইন বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মিস. সান্দ্রা রো, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ আব্দুল মান্নান এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর চেয়ারম্যান এবং টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, “ইতিহাস কিংবা অতীতের সাথে লড়াই করা সম্ভব না কিন্তু চাইলে নিজেই নিজের ভবিষ্যত তৈরি করা যায়। আর এই বিষয়টি তরুণদের হাতেই আছে। শুধু স্বপ্ন দেখেই নয়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে হবে।”
তিনি আরো বলেন,কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি চিন্তা, গবেষণা, বাইরে যাওয়া. অ্যাডভেঞ্চার, ঝুকিঁগ্রহণ, স্টার্টআপ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও নিজেকে নিযুক্ত করতে হবে। সবশেষে তিনি এই আন্তর্জাতিক আয়োজনে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজকসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ব্লকচেইন বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় জায়গা হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক কনটেস্ট বাংলাদেশে আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত ও সত্যিই আনন্দিত।
পলক বলেন, তরুণরাই ভবিষ্যতের অগ্রগতির মশাল বহণকারী। আমি বিশ্বাস করি, ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে আরো বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অংশ নিবেন।
হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা বলেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য এমন একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজন করা অনেক কঠিন ছিল। বাংলাদেশ এত সুন্দরভাবে এই কাজটা সফলতার সাথে করতে পেরেছে যা সত্যিই প্রশংসনীয় বলে মনে করেন ড. লরেন্স মা। পরিশেষে, উক্ত অনুষ্ঠানে গ্লোবাল ব্লকচেইন বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মিস. সান্দ্রা রো কী-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, অলিম্পিয়াডের পাশাপাশি আয়োজনের মোট ৪ টি সেমিনারের আয়োজন রয়েছে। সেমিনারগুলি হবে সিবিডিসি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি, ই-গভর্নেন্স, আইডেন্টিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি এবং ফিনটেক বিষয়ে।
এবারের আয়োজনে ফিনটেক ইনফ্লুয়েন্সার কনসেনসিসের এপিএসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক চার্লস ডি’হাউসি “সিবিডিসি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। উক্ত সেমিনারটি ৮ অক্টোবর, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে।
“ই-গভর্নেন্স” বিষয়ক সেমিনারটি আগামী ৯ অক্টোবর, শনিবার বিকাল ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবে। “আইডেন্টিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি” বিষয়ক সেমিনারটি হবে ৯ অক্টোবর, শনিবার সন্ধ্যা ৬টায়। কানাডা সরকারের ট্রেজারি বোর্ড সচিবালয়ের আইডেন্টিটি ম্যানেজমেন্টের সিনিয়র পলিসি অ্যানালিস্ট টিম বৌমা সেমিনারের মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
“ফিনটেক” বিষয়ক সেমিনারটি আগামী ১০ অক্টোবর, রবিবার দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আগামী ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় আয়োজিত হবে।